۴ آذر ۱۴۰۳ |۲۲ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 24, 2024
পোপ ফ্রান্সিস
পোপ ফ্রান্সিস

হাওজা / ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস ক্রিসমাস বা বড় দিন উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে বিশ্ব সমাজের নীরবতার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।

হাওজা নিউজা বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস ক্রিসমাস বা বড় দিন উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে বিশ্ব সমাজের নীরবতার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।

তিনি ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইউক্রেন, সুদানসহ আরো অন্যান্য দেশে বিরাজমান গভীর সংকট ও সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এসব সংকট অবসানের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, অসংখ্য ভাই ও বোনের যন্ত্রণা ও তাদের আর্তনাদ না শোনার ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হব আমরা।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনে মানবিক বিপর্যয়ে নিষ্ক্রিয়তার জন্য পোপ ফ্রান্সিস পাশ্চাত্য বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যারা কিনা চলমান বিভিন্ন সংকট সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। পাশ্চাত্যের সমর্থন নিয়ে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি জোটের সামরিক আগ্রাসনে দরিদ্র এ আরব দেশটিতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেতে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে সৌদি আরব ও আমিরাত ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।

ইয়েমেনে সৌদি আরব ও আমিরাতের আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা সংঘাত অব্যাহত থাকার অন্যতম কারণ। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে ওই দেশটির জনগণ নজিরবিহীন ও আরো ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় এবং দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হবে। ইয়েমেনের অবস্থা এতোটাই ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যে এমনকি মার্কিন ডেমোক্রেট দলের সিনেটর ক্রিস মরফিও এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ইয়েমেন যুদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, ইয়েমেনের বিরুদ্ধ আকাশ, সমুদ্র ও স্থল পথে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সর্বাত্মক অবরোধের কারণে এ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। অবরোধের কারণে তীব্র খাদ্য সংকট ও ওষুধের অভাবে সেখানে পুষ্টিহীনতা ও নিরাময় অযোগ্য বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। তীব্র জ্বালানির অভাবে দেশটির সব কিছু অচল হয়ে পড়েছে এবং এ পর্যন্ত বহু মানুষ মারা গেছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের প্রায় ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠী অর্থাৎ প্রায় তিন কোটি মানুষ চরম দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন।

অন্যদিকে ইহুদিবাদী ইসরাইল দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর জুলুম নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও দখলদারিত্ব অব্যাহত রেখেছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা এবং ফিলিস্তিনি নেতাদের হত্যা করে চলেছে ইসরাইল। ইসরাইলের প্রধান মিত্র আমেরিকা এ ক্ষেত্রে ইসরাইলকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং জাতিসংঘে ইসরাইল বিরোধী যে কোনো প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে সরাসরি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ওয়াশিংটন।

এ অবস্থায় পোপ ফ্রান্সিস ইয়েমেন, ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য এলাকায় মানবিক বিপর্যয় রোধে পদক্ষেপ নেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .